মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে সংবদ সম্মেলনে র্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হক খান জানান, আটককৃতের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
আটক সাদ বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার জয়পুরপাড়া এলাকার আজিজুর রহমানের ছেলে এবং দুপচাঁচিয়া দারুসসুন্নাহ কামিল মাদরাসার আলিম দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
গত ১০ নভেম্বর রোববার দুপুরে জয়পুরপাড়া এলাকায় ‘আজিজিয়া মঞ্জিল’ নামের বাড়ির একটি ফ্ল্যাটের ডিপফ্রিজ থেকে উম্মে সালমাকে (৫০) হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করেন পরিবারের লোকজন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
মেজর এহতেশামুল হক খান বলেন, গত রোববার বিকেলে আমরা তদন্ত শুরু করি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা জানতে পারি, ওই বাড়িতে বহিরাগত কেউ প্রবেশ করেননি। তখন আমাদের সন্দেহ কেন্দ্রীভূত হয় পরিবারের সদস্যদের প্রতি।
তিনি বলেন, বাড়িতে ডাকাতির চেষ্টা দেখানো হয়েছিলো, তবে বাড়ির যে দরজা সেটা অক্ষত ছিল। বাড়ির ভেতরে কিছু জিনিসপত্র এলোমেলো ছিল। আলমারি ভাঙচুর করা ছিল। এ থেকে প্রতীয়মান হয় ঘটনার সঙ্গে এমন কেউ জড়িত যার কাছে বাড়ির চাবি আছে। আমরা জানতে পেরেছিলাম, ওই ফ্ল্যাটের তিনটি চাবি ছিল। যার মধ্যে দুইটি গৃহবধূর কাছে এবং অন্যটি তার ছোট ছেলের কাছে থাকতো। আমরা টেকনোলজি পর্যালোচনা করে দেখেছি, ওই সময় বাসায় গৃহবধূ অবস্থান করছিলেন এবং সেখানে তার ছোট ছেলে সাদও ছিলেন।
তিনি আরো বলেন, ঘটনার তদন্তে গিয়ে আমরা নিহতের পরিবার থেকে জানতে পারি, সাদ তার বাবাসহ অন্য আত্মীয়দের সবাইকে জানান তার মাকে পাওয়া যাচ্ছে না। খবর পেয়ে তার বাবা এবং মামারা এসে খোঁজাখুজি শুরু করেন। এরই একপর্যায়ে সাদ ডিপফ্রিজ খুলে তার মায়ের লাশ দেখতে পেয়ে সবাইকে জানান। এ বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের সন্দেহ সাদের দিকেই যায়। এরপর আমরা গতকাল রাতে নিহতের ছেলে, তার বাবা আজিজুর রহমান এবং জুয়েল রানা প্রামানিক নামে এক ব্যক্তিসহ তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসি। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে সাদ স্বীকার করেন তিনি তার মাকে হত্যা করেছেন।
র্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, হত্যাকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে তিনি আমাদের জানিয়েছেন, তার একটি প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং হাত খরচের কিছু বিষয় ছিল। এছাড়া আমরা টেকনোলজির মাধ্যমে জানতে পেরেছি, তার কিছু ট্রানজেকশনের বিষয় ছিল। আমরা ধারণা করছি সে অনলাইনের জুয়ায় আসক্ত হয়ে থাকতে পারে।
মেজর এহতেশামুল হক খান বলেন, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন। মামলার বাদী তার পরিবারের মধ্য থেকেই হয়তো কেউ হবেন। যদি কেউ না হয় তবে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।