ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি :
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বেড়ে যাওয়া ছিনতাই প্রতিরোধে চলছে যৌথবাহিনীর অভিযান। টানা ৪ দিনের ভৈরব শহর ও গ্রামের ৬০ জন ছিনতাইকারীকে আটক করেছে থানা পুলিশ। ৩ মার্চ সোমবার সকালে আদালতের মাধ্যমে ১২ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া পর্যায়ক্রমে ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৬ জন, ২৮ ফেব্রুয়ারি ৮ জন ও ১ মার্চ ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে ৩৫ জন চিহ্নিত ছিনতাইকারী রয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে ভৈরব থানাসহ বিভিন্ন থানায় চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির একাধিক মামলা রয়েছে। বাকী ২৫ জন সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানি।
এদিকে একাধিক ছিনতাইয়ের অভিযুক্ত আসামিদের আটকের পরও আতঙ্ক যেন কাটছে না ভৈরববাসীর। পবিত্র রমজান ও পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে বেপরোয়া হয়ে পড়েছে ছিনতাই চক্র। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি ছিনতাই হওয়ার প্রায় অর্ধশতাধিক স্পট থাকলেও নিয়মিত ছিনতাইয়ের স্পট ১০ থেকে ১২টি। ওইসব স্থানে পুলিশি টহল জোরদার হলে ভৈরবে ছিনতাইয়ের ঘটনা ও আতঙ্ক দুইটাই কমে যাবে। স্থানীয়দের তথ্য মতে ভৈরবের স্পটগুলোর মধ্যে বঙ্গবন্ধু সরণি সড়কের নদী বাংলা সেন্টার পয়েন্ট ও ভিআইপি রোড এলাকায়, রেলওয়ে স্টেশন সড়ক, সুইপার কলোনি সড়ক, নাটাল মোড়, গাছতলা ঘাট, হাজী আসমত কলেজ সড়ক ও স্টেডিয়াম সড়কে প্রতিনিয়ত ছিনতাই হচ্ছে।
এদিকে পুলিশ বলছে চিহ্নিত এলাকাগুলোতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। যদিও গুরুত্বপূর্ণ জায়গা ভৈরব বাজার এলাকায় শহর ফাঁড়িতে লোকবল অনেক কম।
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ইদ আসলেই ছিনতাইকারীরা বেপরোয়া হয়ে যায়। তবে দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির কারণে চুরি ছিনতাই অগণিত হারে বেড়েছে। প্রতিদিন কোন না কোন স্পটেই ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। থেমে নেই বিভিন্ন বাসা বাড়িতে চুরি হওয়া। এদিকে সন্ধ্যা হতেই ভৈরব শহরের সাথে গ্রামের মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শহরের সাথে গ্রামের যোগাযোগের রাস্তা দিয়ে ছোট ছোট যানবাহন অনেক দিন ধরেই সন্ধ্যার পর বন্ধ রয়েছে। ছিনতাই আতঙ্কে কেউ বাড়ি থেকে বের হতে চাই না। ছিনতাই কবলে পড়লে সর্বহারা হওয়া ছাড়াও রক্তাক্ত হতে হয়। বিগত বছরগুলোতে পুলিশ, আইনজীবী, বাজারের ব্যবসায়ী ও পথচারীসহ অনেকেই ছিনতাইকারীদের হাতে প্রাণ দিতে হয়েছে। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে স্থানীয়দের দাবি ভৈরব শহরে চিহ্নিত স্পটগুলো যেন টহল জোরদার করা হয়। কারণ মাদক সেবনকারী, সন্ত্রাসী, কিশোর গ্যাং সদস্যরা এসব ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত রয়েছে বলে জানায় তারা।
অপরদিকে ছিনতাই প্রতিরোধে ভৈরবে মশাল মিছিল, বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেছে বৈষম্যরিবোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ও খেলাফত মজলিসের নেতৃবৃন্দ। ইতিমধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটামও দিয়েছে প্রশাসনকে।
এ বিষয়ে ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানি বলেন, সারা দেশে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে ভৈরবে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির একাধিক অভিযোগ রয়েছে। দিনদিন বৃদ্ধি পাওয়া চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই বন্ধ করতে মধ্যরাত থেকে শুরু করে দিনভর বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে যৌথবাহিনী। গত চারদিনে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় অর্ধশতাধিকের বেশি ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আব্দুল করিম
সম্পাদকীয় কার্যালয়: এস করিম ভবন, তৃতীয় তলা ৪৩, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট ঢাকা- ১২০৫
ফোন: 02 9356582, মোবাইল: 01715635623, ইমেইল: [email protected]