নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১২:০০
ভারত থেকে পেঁয়াজ আসার খবরে বাংলাদেশের বাজারে দাম আরেকটু কমেছে। ভারত বাংলাদেশে ২৫ হাজার টন পেঁয়াজ রপ্তানি করবে, এমন খবরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আজ রোববার দাম আরও কিছুটা কমতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
আজ সকালে পুরান ঢাকার শ্যামবাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে ও ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৫০ টাকা দরে। এখানকার ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মাজেদ বলেন, গতকাল দেশি পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে তবে আজ সকালে ৬৫ টাকাতেই বিক্রি করলাম। দাম একটু কমের দিকেই।
গতকাল শনিবার শ্যামবাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়, যা দুই দিন আগের তুলনায় ২০ টাকার মতো কম। অন্যদিকে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয় প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৫৫ টাকার মধ্যে।
জানতে চাইলে শ্যামবাজারের নবীন ট্রেডার্সের মালিক নারায়ণ চন্দ্র সাহা সময়কন্ঠকে বলেন, আজ দাম আরও কিছুটা কমতে পারে। কারণ হলো, প্রচুর পেঁয়াজ আসছে। কিন্তু ক্রেতা একেবারেই কম।
ঢাকার খুচরা বাজারেও দাম কমিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। খুচরা দোকানে গতকাল দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হয়। খুচরা বিক্রেতারাও ক্রেতা কম থাকার কথা বলছেন।
স্থলবন্দরে আটকে থাকা বাংলাদেশমুখী পেঁয়াজবাহী ট্রাক গতকাল ছাড়ে ভারত। গতকাল পেঁয়াজ নিয়ে এসব ট্রাক বাংলাদেশে প্রবেশ করতে শুরু করে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, শুধু গত সোমবার আমদানির প্রক্রিয়া শেষ করে যেসব ট্রাক অপেক্ষারত ছিল, সেগুলোকেই বাংলাদেশে ঢোকার অনুমতি দিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ।
পেঁয়াজ নিয়ে আসা ট্রাকের চালক ও খালাসের দায়িত্বে থাকা সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টরা বলছেন, পাঁচ দিন ধরে আটকে থেকে পেঁয়াজে পচন ধরেছে। ট্রাকভেদে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পেঁয়াজ পচে যাওয়ার অভিযোগ করেছেন তাঁরা।
ভারত গত সোমবার হঠাৎ করেই পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসে সন্ধ্যায়। তার আগে সারা দিন পেঁয়াজ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে ঢোকেনি। এর মধ্যে বেশ কিছু চালানের আমদানির প্রক্রিয়া শেষের পথে ছিল। ভারত রপ্তানি বন্ধ করার পর বাংলাদেশে দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায়। অবশ্য তিন দিন ধরে বাজারে দাম পড়তি।
ভোমরা সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে ঢোকা পেঁয়াজের ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ পচে গেছে।
ভারতের ট্রাকচালক রমেশ পাড়ওয়ালও একই কথা জানান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঘোজাডাঙ্গায় (ভোমরার ওপাশে ভারতীয় বন্দর) পেঁয়াজ নিয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে অপেক্ষায় ছিলেন।
সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে আসা ভারতীয় পেঁয়াজেরও প্রায় অর্ধেক পচে গেছে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে পেঁয়াজের ট্রাক ঢোকা শুরু হয়।
বন্দর পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত পানামা পোর্ট লিংক লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক বেলাল হোসেন বলেন, পেঁয়াজের ট্রাক বন্দর এলাকায় ঢোকার পরই দুর্গন্ধ ছড়ানো শুরু করে। বিকেলে ট্রাক থেকে পেঁয়াজ নামানোর পর দেখা যায় প্রায় অর্ধেক নষ্ট।
দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পেঁয়াজ ঢোকা শুরু করে বেলা তিনটার দিকে। সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩১টি ট্রাকে ৭২১ টন পণ্য প্রবেশ করে। আমদানিকারক আকাশ ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আলমগীর রহমান বলেন, পাঁচ দিন বৃষ্টি ও গরমে আটকে থেকে অর্ধেকের বেশি পেঁয়াজ পচে যেতে পারে। প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫ টাকায় কেনা পড়েছে তাঁর।
যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে গতকাল ভারত থেকে পেঁয়াজবোঝাই কোনো ট্রাক প্রবেশ করেনি। তবে বেনাপোলের ওপাশে ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দরে পেঁয়াজবোঝাই অন্তত পাঁচটি ট্রাক দাঁড়িয়ে ছিল।
বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. আজিজুর রহমান বলেন, পেট্রাপোলে আটকে থাকা পেঁয়াজের ট্রাক রপ্তানিকারকেরা সাতক্ষীরার ভোমরা বন্দরের দিকে নিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আব্দুল করিম
সম্পাদকীয় কার্যালয়: এস করিম ভবন, তৃতীয় তলা ৪৩, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট ঢাকা- ১২০৫
ফোন: 02 9356582, মোবাইল: 01715635623, ইমেইল: [email protected]