আবু আব্দুল্লাহ,ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি:
নাবালিকা কন্যাকে ধর্ষণ থেকে বাঁচাতেই ইসমাইলকে খুন করে শান্তা, পরে দুই জনের সহযোগিতায় লাশ ফেলে দেয়া হয় টয়লেটের ট্যাঙ্কে ।আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে বেড়িয়ে আসে আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুরের আলোচিত ইসমাইল হত্যার রহস্য। এ ঘটনায় হাবু মিয়া নামে আরো এক যুবক গ্রেফতার।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের লালপুর হোসেনপুর গ্রামের আলোচিত ইসমাইল হত্যার রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। রোববার (২৫ জানুয়ারি) বিকেলে খুনের অভিযোগে আটক শান্তা বেগম আদালতে দেয়া তার জবানবন্দিতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাখাওয়াত হোসেন ফৌজদারি আইনের ১৬৪ ধারায় এ জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে শান্তা বেগম জানান, তিনি ইসমাইল মিয়ার নিকট থেকে সুদের ভিত্তিতে পঞ্চাশ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু সময় মত উক্ত ঋণের আসল কিংবা সুদ কোনোটাই দিতে পারছিলেন না। এ দুর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে ইসমাইল শান্তাকে কুপ্রস্তাব দেন। বাধ্য হয়ে এক পর্যায়ে শান্তা তার কুপ্রস্তাবে রাজি হয়ে যায়। এরপর থেকে ইসমাইল প্রায়ই শান্তার সাথে দৈহিকভাবে মিলিত হতেন। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) রাতে শান্তার রাজমিস্ত্রি স্বামী কাজের সুবাদে বাড়িতে না থাকায় ইসমাইল শান্তার ঘরে প্রবেশ করে তার সাথে দৈহিকভাবে মিলিত হন। এসময় ইসমাইলের দৃষ্টি পড়ে শান্তার ১৩ বছরের নাবালিকা কন্যা কেয়া আক্তারের দিকে। তিনি শান্তার নিকট কেয়ার সাথে দৈহিক মিলিত হওয়ার অভিলাষ প্রকাশ করে। এসময় শান্তা তাকে বেড়িয়ে যাবার জন্য অনুরোধ করতে থাকে। কিন্তু ইসমাইল মিয়া শান্তার অনুরোধ না শুনে ঘুমের মধ্যে তার নাবালিকা মেয়েকে ঝাপটিয়ে ধরে ধর্ষণ করার উদ্দেশ্যে ধস্তাধস্তি শুরু করে। এতে শান্তা চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে কোটাবাড়ি (রাজমিস্ত্রির লোহার যন্ত্র) দিয়ে ইসমাইল মিয়ার মাথা ও কানের পাশে উপর্যুপরি আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে শান্তা তার পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে টাকার বিনিময়ে দুই জনের সহযোগিতায় লাশটি পার্শ্ববর্তী একটি পরিত্যক্ত বাড়ির টয়লেটের ট্যাঙ্কে ফেলে দিয়ে আসেন।
রাতে তার স্বামী বাড়িতে আসলেও তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানাননি।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে এ ঘটনায় রোববার সকালে হোসেনপুর গ্রামের হাবু মিয়ার ছেলে আমজাদ হোসেনকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ
উল্লেখ্য যে, গত শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের হোসেনপুর টানপাড়া গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির টয়লেটের ট্যাংক থেকে ইসমাইল মিয়া(৬০) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত ইসমাইল মিয়া একই উপজেলার লামা শরীফপুর গ্রামের মৃত উজির আলীর ছেলে।এ ঘটনায় পুলিশ শুক্রবার তাৎক্ষণিকভাবে হোসেনপুর গ্রামের ধন মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া ও তার স্ত্রী শান্তা আক্তারকে গ্রেফতার করে।এ ঘটনায় শুক্রবার রাতেই নিহতের ছেলে সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে শান্তা বেগম ও তার স্বামী সুমনসহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনকে আসামি করে আশুগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।
আশুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ বিল্লাল হোসেন জানান, খুনের ঘটনায় সম্পৃক্তদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে পুলিশ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।
প্রকাশক ও সম্পাদক: মো: আব্দুল করিম
সম্পাদকীয় কার্যালয়: এস করিম ভবন, তৃতীয় তলা ৪৩, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেট ঢাকা- ১২০৫
ফোন: 02 9356582, মোবাইল: 01715635623, ইমেইল: [email protected]