পাকা দালান একতলা ভবনের একটি বাড়ি । রজার একটু দূরে বাহিরের দেয়াল ঘেঁষে আঁকড়ে উঠা এই গাছটি । জাতীয় ফল নামে যা পরিচিত । খুব মিষ্টি আর রসাল। শুনেছি দাদিমার হাতে রোপণ করা। শিশু চারাটি বড় হতে হতে আজ চল্লিশের বেশি বছর বয়স পার করেছে । একটা সময় গাছটি প্রচুর ফল দিতো । স্বাদ মুখে লেগে থাকার মতো । কাঁচা অবস্থায় কতো তরকারি রান্না হতো , বীচি দিয়ে ভর্তা, চাটনি দিয়ে কচি কাঁঠাল বানানো । পাকা কাঁঠালের খোসা গুলো গাভীটারও খুব পছন্দের ছিল । ঝরা পাতা গুলো দাদি রান্নার কাজে ব্যবহার করতেন ।
মা ও……..।
গত দু’বছর থেকে গাছটার কি যে হলো কোন ফলই দিচ্ছে না । ডালপালা গুলো ও অনেকটা শুকিয়ে গেছে। গাছটা এখনও প্রাণসঞ্চারিত কিন্তু শিকড়ের আষ্টেপৃষ্ঠে জীর্ণ অবস্থা । গোড়ার দিকে মাটির অনেকটা অংশ জুড়ে ইঁদুর সুড়ঙ্গ করেছে । রোজ রোজ দু’বেলা উঠান ঝাড়ু দিতে হয় । মা খুব বিরক্ত , বাবা ও…..। টাকার দরকার নেই তবুও গাছটা বিক্রি করে দিলেন অল্প দামে। অপ্রয়োজনীয় হয়ে গেছে তা-ই হয়তো । সেদিন খুব সকালে কয়েকজন লোক এলো হাতিয়ার নিয়ে গাছটাকে কাটবে বলে । আমি দাঁড়িয়ে ছিলাম তার দিকে চেয়ে । মনে হচ্ছিলো সে আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করছে , আহুতি ছিল বাঁধা দাও, পারলাম না বাঁধা দিতে । পূর্বাশার আলো ধীরে ধীরে শেষ হলো । পশ্চিম আকাশে প্রভাকরের ঝলকানি থেমে যেতে লাগলো । সেই বিশেষ মুহূর্ত দ্বারে এলো , যার নাম সন্ধ্যা । বিদায় ঘণ্টা বাজল । আর তখনই চির বিতাড়িত হলো, একটা ভ্যানগাড়িতে করে । ঠিক সেদিনের মতো, সেই ভাবে —
উটকো বলে যেভাবে দাদিমাকে পাঠিয়ে দেওয়া হলো বৃদ্ধাশ্রমে ।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।