উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগে রাতে হয়েছে ৯ গোলের মহারণ। যে ম্যাচে পিছিয়ে থেকেও পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকাকে ৫-৪ গোলে হারিয়েছে বার্সেলোনা। মহানাটকীয় এই জয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ঘোলো নিশ্চিত করেছে হ্যান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
ঘরের মাঠ স্টাডিও দ্য লুসে ম্যাচ শুরুর দ্বিতীয় মিনিটেই বার্সেলোনাকে চমকে দেয় বেনফিকা। গ্রিস ফরোয়ার্ড ভাঙ্গেলিস পাভলিদিসের গোলে লিড নেয় স্বাগতিকরা। ম্যাচের ১৩ মিনিটে অবশ্য সমতা আনে কাতালান ক্লাবটি। পেনাল্টি থেকে স্কোরশিটে নাম তোলেন লেভানদোভস্কি। তবে এরপরই মাঠে ঘঠে একের পর এক নাটকীয়তা।
তবে বাঁক বদলের এই ম্যাচে বার্সার জয়ের নায়ক রাফিনহা। ব্রাজিলিয়ান এই উইঙ্গার জোড়া গোল করেছে। এরমধ্যে তার জয়সূচক গোলটি এসেছে যোগ করা সময়ের ষষ্ঠ মিনিটে। গোলের আনন্দের ঠিক পরই বাজে রেফারির শেষ বাঁশি। তবে এই গোল নিয়েও উত্তাপ ছড়ায় মাঠে। বদলি নামা ফেরান তোরেসের কাছ থেকে বল পেয়ে ডান প্রান্ত দিয়ে দ্রুতগতিতে বক্সে ঢুকে, বেনফিকার ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে দারুণ এক গোল করেন এই উইঙ্গার। গোলের আগে লিয়ান্দ্রো বারেইরো বার্সার দুই খেলোয়াড়ের ধাক্কায় বক্সে পড়ে গেলে পেনাল্টির আবেদন জানায় বেনফিকা। কিন্তু স্বাগতিকদের আবেদনে সাড়া দেননি ডাচ রেফারি ড্যানি মাক্কেলি।
এ নিয়ে প্রতিবাদ ও উত্তাপ ছড়ালে বেনফিকার ডাগ আউটে গিয়ে আর্থার কাবরালকে লাল কার্ড দেখিয়ে আসেন রেফারি। বেনফিকার খেলোয়াড়দের সঙ্গে তর্কে জড়ানোয় হলুদ কার্ড দেখতে হয় বার্সার ফেরমিন লোপেজকেও।
ঘটনাবহুল ম্যাচে রেফারি মাক্কেলির আরও কয়েকটি সিদ্ধান্ত বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। পাশপাশি দুই দলের গোলকিপার ও ডিফেন্ডারদের অনেক ভুল চোখে লেড়েছে। আর সেই ভুলেরই সুযোগের সদ্ব্যবহার হ্যাটট্রিকে করে পাভলিদিস। মাত্র ৩০ মিনিটেই তিন গোল করে বার্সাকে স্তব্ধ করে দেন গ্রিসের এই তারকা। তবে তার এই হ্যাটট্রিকের জন্য বার্সা গোলকিপার ভয়চেক সেজনিকেই বেশি ক্রেডিট দেয়া যায়। কেননা, তার দৃষ্টিকটূ ক্লিয়ারেন্সের প্রচেষ্টা থেকে দুটি গোল পান পালভিদিস। যার মধ্যে, একটি পেনাল্টিও রয়েছে
তবে লেভার সৌজন্যেই এই ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয় বার্সা। ১৩ মিনিটে পোলিশ স্ট্রাইকারের পেনাল্টির গোল থেকে সমতায় ফেরে বার্সা। ৩–১ গোলে পিছিয়ে থেকে বিরতিতে যাওয়া বার্সার দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন রাফিনহা। ৬৪ মিনিটে তার গোলে ব্যবধান কমিয়ে ৩–২ করে কাতালানরা। তবে এর কিছুক্ষণ পরেই আরাউহোর আত্মঘাতী গোলে ৪–২ ব্যবধানে পিছিয়ে যায় ফ্লিকের দল।
৭৮ মিনিটে লামিনে ইয়ামালের আদায় করা পেনাল্টি থেকে আরেকটি গোল করে খেলা জমিয়ে তোলেন লেভানদোফস্কি। ৮৬ মিনিটে পেদ্রির দুর্দান্ত ক্রস থেকে লাফিয়ে ওঠা হেডে ৪–৪ করে বার্সাকে সমতায় ফেরানোর আনন্দে ভাসান বদলি খেলোয়াড় এরিক গার্সিয়া। এরপর রাফিনহার জয়সূচক গোলে ৪–৫ ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে হ্যান্সি ফ্লিকের শিষ্যরা।
প্রসঙ্গত, চ্যাম্পিয়নস লিগ ইতিহাসে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার কোনো দল ৪ গোল খেয়েও ম্যাচ জিতলো। ২০১৬ সালের নভেম্বরে লেগিয়া ওয়ারশের বিপক্ষে ৮–৪ গোলে জিতেছিল বরুশিয়া ডর্টমুন্ড।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।