সকল মেনু

চীনের দুজিয়াংইয়ান প্রকল্প হতে পারে তিস্তা পানি ব্যবস্থাপনার আদর্শ

দুজিয়াংইয়ান সেচ ব্যবস্থা প্রাচীন চীনের প্রকৌশল অধ্যায়ের এক বিস্ময়। চৈনিক সভ্যতার অন্যতম প্রাচীন নিদর্শন এই ‘দুজিয়াংইয়ান ইরিগেশন সিস্টেম’। খ্রিস্টপূর্ব ২৫৬ সালে কিন রাজবংশের সময় গভর্নর লি বিং ও তার পুত্র এটি নির্মাণ করেন, যা ২০০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে টিকে আছে। এই চমৎকার ব্যবস্থা মিন নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি টেকসই সেচব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহায়তা করেছে।

নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত না করে তিস্তা বাধ প্রকল্পেও এমন কার্যক্রম গ্রহণ করা যায় বলে মনে করছেন অনেকেই, যা স্থানীয় জনপদ ও কৃষিখাতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

প্রচলিত বাঁধের মতো এটি নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্ত না করে। বরং বাঁধ, খাল এবং অনন্য “মাছের মুখ” আকৃতির বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে পানি প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ ও বণ্টন করে। আজও এটি বিস্তীর্ণ কৃষিজমিতে পানি সরবরাহ করছে, যা এটিকে বিশ্বের প্রাচীনতম কার্যকরী সেচ ব্যবস্থাগুলোর একটি হিসেবে পরিচিতি এনে দিয়েছে।

এই ব্যবস্থাটি শুধু প্রযুক্তির নিদর্শন নয়, বরং চীনা উদ্ভাবনী শক্তি ও প্রকৃতির সঙ্গে সম্প্রীতির প্রতীক। আধুনিক বাঁধের মতো এটি পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না, বরং মাটির ক্ষয় রোধ ও প্রতিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করে।

ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃত, দুজিয়াংইয়ান সারা বিশ্বের পর্যটকদের আকর্ষণ করে, যারা এর টিকে থাকার সক্ষমতা ও প্রকৌশল দক্ষতা দেখতে আসেন। এর আশপাশের মন্দির, প্রাচীন প্যাগোডা এবং মনোরম চিংচেং পর্বত এই স্থানকে আরও ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এনে দিয়েছে।

দুজিয়াংইয়ান শুধু একটি প্রকৌশল বিস্ময় নয়, বরং টেকসই পানি ব্যবস্থাপনায় চীনের প্রাচীন জ্ঞানের এক অনন্য উদাহরণ।

নদীমাতৃক বাংলাদেশের গর্বের বিষয় ছিল নদী। সময়ের ব্যবধানে বাংলাদেশের নদীগুলো এখন নিজের জৌলুস হারাতে বসেছে। কোন কোন নদী ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। ঐতিহ্য এবং প্রাণ হারানো নদীর জন্য চীনের সিচুয়ান প্রদেশের দুজিয়াংইয়ান প্রকল্প হতে পারে তিস্তাসহ বাংলাদেশের নদী ব্যবস্থাপনার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top