সকল মেনু

ধর্ষণের মামলা ধামাচাপা দিতে ভিকটিমের বাবাকে হত্যা, আটক ৪

রাকিবুল ইসলাম রাজন,বরগুনা প্রতিনিধি:

বরগুনায় পৃথক দুটি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পৌর শহরের কালীবাড়ি এলাকায় মন্টু চন্দ্র দাসকে শ্বাসরোধ করে এবং সদর উপজেলার ১নং বদরখালী ইউনিয়নে বাওয়ালকর গ্রামে মোঃ মিরাজ হোসেন নামে এক মাইক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার গভীর রাতে পৃথক এ দুটি ঘটনা ঘটে। মন্টু দাস হত্যার ঘটনায় প্রাথমিকভাবে চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। এরা হলেন শ্রীরামচন্দ্র রায় (৫২), বিপুল চক্রবর্তী (৪১) রাকিবুল ইসলাম (৪২) এবং মোঃ আসলাম (৩৫) ওরফে কালু।

বরগুনা পৌর শহরের কালিবাড়ি এলাকায় ১২ বছরের মেয়েকে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ওই ভিকটিমের বাবা মন্টু চন্দ্র দাস কে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবারের সদস্যরা।

মন্টু দাসের স্ত্রী শিখা রানী সময়কন্ঠকে বলেন, তার স্বামী বরগুনা শহরে একটি মুরগীর দোকানের কর্মচারী ছিলেন। রাতে প্রতিদিনের মতো নির্ধারিত সময়ে বাড়িতে না আসায় মন্টুর মোবাইল ফোনে কল দিলে বাড়ির পেছনে পুকুর পাড়ে মোবাইলের আওয়াজ শুনতে পান তারা। পরে সেখানে গিয়ে মন্টুর মরদেহ দেখতে পান। এ সময় মন্টুর পরনের কাপড় ছিল ভেজা, হাতে কামড়ের দাগ ও সারা শরীরে কাদা মাখা ছিল। পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। দেড় মাসের শিশু সহ তিন কন্যা সন্তান নিয়ে মন্টুর স্ত্রী এখন নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছেন। মন্টু চন্দ্র দাস বরগুনা পৌরশহরের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কালিবাড়ি কড়ইতলা এলাকার মৃত জয়েশ্বর দাসের ছেলে।

গত ৫মার্চ মন্টু দাসের সপ্তম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে (নন্দিনী দাস) কে রাতভর ধর্ষণ করার পর তাকে বরগুনা ডিসি পার্কে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। এঘটনায় আদালতে বাদী হয়ে মামলা করেন মন্টু দাস। মামলার প্রধান আসামি সজিব চন্দ্র রায় কারাগারে রয়েছে। বুধবার সেই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে তারিখ ছিল। তাই মামলা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মামলার বাদীকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেন শ্রী রাম চন্দ্র রায় এবং তার লোকজন। এমনটা জানিয়েছেন মন্টু দাসের স্বজনরা।

মন্টু দাসের আপন ভাই শ্যামল চন্দ্র দাস সময়কন্ঠকে বলেন, ‘আমার ভাতিজিকে ধর্ষণ করার পর আমরা মামলা দেই, সেই মামলায় সৃজিতকে ধরে থানায় হস্তান্তর করি। তাই এই মামলাকে ধামাচাপার দেওয়ার জন্য আমার ভাই কে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে সৃজিতের সঙ্গীরা তার নেতৃত্বে ছিলো সৃজিতের বাবা শ্রী রাম চন্দ্র রায়। আমি হত্যার বিচার চাই’।

আপরদিকে ১নং বদরখালী ইউনিয়নে বাওয়ালকর গ্রামে মোঃ মিরাজ হোসেন হত্যার বিষয়ে তেমন কিছু বলতে পারছেন না স্বজনরা।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরগুনা সদর সার্কেল মোঃ আব্দুল হালিম সময়কন্ঠকে বলেন, দুটি হত্যার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে এবং মন্টু দাস হত্যার ঘটনায় চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। খুব দ্রুত বাকি অপরাধীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top