চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাংলাদেশ দল থেকে বাদ পড়লেন লিটন দাস কিন্তু কেন বাদ পড়লেন সে কথা নিজেও জানেন লিটন। শেষ ৭টি ওয়ানডে ইনিংসে এক অঙ্কের বেশি রান করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। তাঁর সাম্প্রতিকতম ৫০+ স্কোর এসেছিল ২০২৩ সালের অক্টোবরে ক্রিকেট বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে।
ফেব্রুয়ারির ১৯ তারিখ থেকে শুরু হবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫। তার আগে রবিবার দল ঘোষণা করে বিসিবি। ১৫ সদস্যের টিম লিস্টে নাম নেই অনেক তারকা ক্রিকেটারেরই। তাঁদের মধ্যে একজন হলেন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান লিটন দাস।
এরই মাঝে রবিবারই বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে দুরন্ত ব্যাটিং করেন তিনি। অনেকেই সেটাকে বোর্ডের উদ্দেশ্যে তাঁর ‘জবাব’ বলে মনে করছেন। ঢাকা ক্যাপিটালসের হয়ে ব্যাট হাতে ৫৫ বলে অপরাজিত ১২৫ রান করেন তিনি, যা বিপিএলের ইতিহাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ রান। তবে এরকম ফর্মে থাকা একজন ব্যাটসম্যানকে কেন বাদ দেওয়া হল দল থেকে?লিটনসহ বাংলাদেশি ক্রীড়ামোদিরা সবাই জানে সাম্প্রতিক ওয়ানডে ফর্মের কারণেই বাদ পড়েছেন লিটন। অথচ আনন্দবাজার সহ ভারতের কিছু মিডিয়া দাবি করতে থাকেন বাংলাদেশে ধর্মের ভিত্তিতে তাঁকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
বিপিএলে বিধ্বংসী ইনিংস খেলার পর বাংলাদেশের জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া নিয়ে মুখ খুলেছেন লিটন। তিনি গত কয়েক ম্যাচে প্রত্যাশা মতো পারফর্ম করতে পারেননি বলে স্বীকার করেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে ভারতীয় মিডিয়া যেকোনো বিষয়ে সাম্প্রদায়িক রং লাগানোর চেষ্টা করছে । এর আগে লিটন দাশের বাড়ি পুড়ানো নিয়ে প্রপাগান্ডা চালিয়েছিল ভারতীয় মিডিয়া । তখন লিটন ফেসবুক স্ট্যাটাস এর মাধ্যমে প্রতিবাদ করেছিলেন।
এবার লিটনকে নিয়ে আনন্দবাজারের মত পত্রিকা সাম্প্রদায়িক কার্ড খেলতে চাওয়ায় লজ্জা ও বিরক্তি প্রকাশ করলেন স্বনামধন্য ক্রীড়া সাংবাদিক দেবব্রত মুখোপধ্যায়। নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন আনন্দবাজারের মত পত্রিকা যখন এমন নোংরা হেডিং দেয় একজন হিন্দু হিসেবে আমি লজ্জা পাই। তিনি বলেন আমাদের কোনো ক্রিকেটার বা ফুটবলার কখনো ধর্মগত পরিচয়ের কারণে কখনো সমস্যায় পড়েনি।
ফুটবলের উদাহরণ দিয়ে দেবব্রত বলেন, ফুটবলে দীর্ঘকাল বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব করেছে আমাদের রজনি কান্ত বর্মন অথচ সেসময়টায় আমিনুল ইসলাম বুলবুল, বিপ্লবের মত ফুটবলার দলে ছিল। হিন্দু ,মুসলিম,উপজাতি মিলে সুন্দর আমাদের ফুটবল দল। সকল ধর্ম বর্ণের ফুটবলার নিয়ে এমন একটা দল শুধু বাংলাদেশেই সম্ভব পৃথিবীর আর কোথাও সম্ভব নয়।
আমাদের মেয়েদেরে দলেও সকল ধর্মের খেলোয়াড় আছে কোথাও কোন সমস্যা হচ্ছে না।ক্রিকেটে সৌম্য লিটনের উদাহরণ দিয়ে দেবব্রত বলেন, সৌম্য-লিটন যখন দলে থাকে তখন সিনিয়র ক্রিকেটাররা খাবারের বিষয়টা খেয়াল করে। কোথাও দলগত দাওয়াত থাকলে আগেই বলে দেয় খাবারে এমন আইটেম রাখবেন যেন সৌম্য- লিটনের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না আসে ।
নিজের উদাহরণ দিয়ে দেবব্রত বলেন গত বছর কোন একটা দাওয়াতে তিনি(দেবব্রত) বিফ খাবেন বলে সৌম্যকে খোঁচাচ্ছিলেন ।
বিষয়টা মুশফিকের নজরে যেতেই মুশফিক মিরাজকে ধমক দেন যেন ধর্মীয় বিষয়ে রসিকতা না করে অথচ মিরাজ রসিকতা করছিল না। তিনি পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের উদ্দেশ্যে বলেন ব্যক্তিগতভাবে আমি দেবব্রত মুখোপধ্যায় আপনাদের ভাষায় ব্রাহ্মণ সন্তান যতগুলি মুসলিমের বাড়িতে থেকেছি খেয়েছি ততগুলো মুসলিমের সাথে আপনারা মিশেছেন কিনা আমার সন্দেহ আছে।
তিনি তানজিম সাকিবের উদাহরণ দিয়ে বলেন, তানজিম সাকিব একজন প্র্যাকটিসিং মুসলমান হওয়া স্বত্বেও তার(দেবব্রত) খাওয়ার অয়োজন এমনভাবে করেন যেন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না আসে।পশ্চিমবঙ্গের মিডিয়াকে সাম্প্রদায়িক কার্ড না খেলার আহ্বান জানিয়ে দেবব্রত বলেন আমরা হিন্দুরা ভালো আছি।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।