গুঞ্জনকে সত্যি প্রমাণ করেই এই টেস্টে নেই হিটম্যান খ্যাত ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শর্মা।যদিও এই টেস্টে অধিনায়কত্ব করা বুমরাহ বলেছেন রোহিত দলের স্বার্থে নিজেকে নিজেই একাদশ থেকে সরিয়ে নিয়েছেন। পরের প্রশ্নটিও তাই উঠে যাচ্ছে অবধারিতভাবে, তার টেস্ট ক্যারিয়ারের ভবিষ্যৎ কি? সুনিল গাভাস্কার ও রাভি শাস্ত্রির মতো সাবেকদের ধারণা, রোহিতের টেস্ট ক্যারিয়ারের সমাপ্তি এখানেই।
একজন অধিনায়কই যেখানে টিম ম্যানেজমেন্টের অন্যদের সঙ্গে মিলে একাদশের বাকি ১০ জনের নাম চূাড়ন্ত করেন, সেখানে তাঁর নিজেরই ফর্মের কারণে সরে যাওয়া বিরল ঘটনা। এতটা বিরল যে, টেস্ট ক্রিকেটে এমন ঘটনা এর আগে ঘটেছেই মাত্র একবার।
৩৭ বছর বয়সী রোহিত চলতি বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফির তিন টেস্টে ৫ ইনিংস ব্যাট করেছেন। আউট হয়েছেন যথাক্রমে ৩, ৬, ১০, ৩, ৯ রানে। সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের বিপক্ষে চেন্নাই টেস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫ ইনিংসে পঞ্চাশ পার হতে পেরেছেন মাত্র একবার। ধারাবাহিকভাবে ফর্ম এত খারাপ থাকায় আগেই হয়তো বাদ পড়তেন, যদি অধিনায়ক না হতেন।
এখন সিডনিতে নিজেকে বাদ দেওয়া রোহিতের টেস্ট ক্যারিয়ারই অনিশ্চয়তার মুখে। অস্ট্রেলিয়া সফরে ভারতের আর কোনো ম্যাচ নেই। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জায়গা করতে না পারলে ভারতের পরের টেস্ট আরও ৬ মাস পর, পরের চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে। সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে চোখ রেখে নির্বাচকেরা তাঁকে বিবেচনা করবেন কি না, অথবা রোহিত নিজেই ততদিন দলের সঙ্গে ঝুলে থাকতে চাইবেন কি না সেটা এক বড় প্রশ্ন।
টেস্ট ইতিহাসে এর আগে অধিনায়কের ফর্মের কারণে নিজেকে একাদশ থেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘটনাটি কাকতালীয়ভাবে সিডনিতেই ঘটেছিল। ১৯৭৪ সালে অ্যাশেজের চতুর্থ টেস্টে নিজেকে বাদ দিয়েছিলেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইন ডেনেস। সেবারের সিরিজে ব্যাটে রান পাচ্ছিলেন না তিনি। ৬ ইনিংসে সাকল্যে রান ছিল ৬৫ (৬, ২৬, ২, ২০, ৮, ২)।
সিডনিতে নিজেকে বাদ দিলেও অ্যাডিলেডে পরের টেস্টেই একাদশে ফিরেছিলেন ডেনেস। সেটাও অবশ্য প্রয়োজনেই, কারণ সিডনিতে তাঁর বদলি হিসেবে খেলা জন এডরিচ চোটে পড়ায় পরের টেস্ট থেকে ছিটকে গিয়েছিলেন। মজার বিষয় হচ্ছে, দলে ফেরার এক টেস্ট পরই রানে ফিরেছিলেন ডেনেস। সে বার অ্যাশেজ ছিল ৬ টেস্টের। মেলবোর্নে হওয়া শেষ টেস্টে ১৮৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন এই স্কটিশ, যা তাঁর টেস্ট ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ।ভারতীয় ক্রিকেটের বাস্তবতা বিবেচনায় মাইক ডেনেসের মতো রোহিতের ফিরে আসা প্রায় অসম্ভব।
সত্যিই আর টেস্ট না খেললে ৬৭ টেস্টে ১২ সেঞ্চুরিতে ৪০.৫৭ গড়ে ৪ হাজার ৩০১ রান নিয়ে শেষ হবে ৩৭ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের টেস্ট ক্যারিয়ার।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।