গান আর সুরের মুর্ছণায় মুগ্ধতা ছড়িয়েছেন ‘ইকোস অব রেভল্যুশন’ কনসার্টের মধ্যমণি সুরসম্রাট রাহাত ফতেহ আলী খান। ঢাকার আর্মি স্টেডিয়ামে আগত হাজারো সঙ্গীত প্রেমীদের মাতিয়ে রাখেন। ‘ওরে পিয়া, মেরে রাশকে কামার, আফরিন আফরিনে’র মতো জনপ্রিয় ১২টি গান গেয়েছেন। তবে, তিনি কোন পারিশ্রমিক নেননি। মূলত শহীদ পরিবার এবং আহত ব্যক্তিদের সহায়তায় সংগ্রহ করা হচ্ছে তহবিল। সেই সাধু উদ্যোগেই ছিল এই কিংবদন্তীর ছোট্ট অবদান। এ ছাড়াও কনসার্টে আলো ছড়িয়েছেন দেশের প্রথম সারির ব্যান্ড- আর্টসেল, চিরকুট ও সিলসিলা।
দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান, অবশেষে রাত পৌনে ১০টায় মঞ্চে উঠেন উপমহাদেশের কিংবদন্তী সঙ্গীতশিল্পী রাহাত ফতেহ আলী খান। সুরের মূর্ছনায় তখন বুদ হয়ে যান আর্মি স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকরা।
একজন নারী দর্শক বলেন, আমার কাছে আজকের রাতটি যাদুর মতো মনে হয়েছে। রাহাত ফতেহ আলী খানের কোনো তুলনা হয়না। একজন কিশোর দর্শক বলেন, এতদিন ইন্টারনেটে গান শুনেছি। তবে সরাসরি গান শোনার অভিজ্ঞতা দারুণ হয়েছে।
তুনা জানে দিয়ে শুরু, এরপর মেরে রাশকে কামার, আফরিন আফরিন, মাস্ত কালান্দার। একের পর এক সব বিখ্যাত গান গেয়েছেন। সুরের তালে মন্ত্রমুগ্ধ দর্শক-শ্রোতারা। একটি-দু’টি নয় একে একে পরিবেশন করেছেন ১২টি বিখ্যাত গান।
কনসার্টে আসা একজন নারী দর্শক বলেন, ছোটবেলা থেকে যে গানগুলো শুনে আসছি , আমাদের জন্য অনেক আবেগাপ্লুত। আর আজকে সরাসরি দেখে অনেক বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে গেছি।
জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহতের পরিবার ও আহতদের পাশে দাঁড়াতে শনিবার আর্মি স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হয় ‘স্পিরিটস অব জুলাই’ ব্যানারে ‘ইকোস অব রেভোল্যুশন’ কনসার্ট। চ্যারিটি কনসার্টে মঞ্চ মাতান এই সুরের যাদুকর। কিংবদন্তী এই শিল্পীর গান সরাসরি উপভোগ করতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ ছিল স্টেডিয়াম।
‘ইকোস অব রেভোল্যুশন’ যোগ দেন অন্তর্বতী সরকারের একাধিক উপদেষ্টারা। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ, বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার উপস্থিত ছিলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, আপনাদের কাছে আমরা ওয়াদা করছি খুনি হাসিনার বিচার এই মাটিতে হবে। তার বিচার এই মাটিতে হতেই হবে। না হলে আমরা থামবো না।
অন্যদিকে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, যদি আবার লড়তে হয় লড়বো। যদি মরতে হয় মরবো। তবে বাংলাদেশের মানুষ যেই স্বপ্নের বাংলাদেশ চায় সেটা আমরা অবশ্যই করবো।
এর আগে, দুপুরে কাওয়ালি ব্যান্ড সিলসিলার সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। একে একে মঞ্চ মাতান জনপ্রিয় র্যাপ সঙ্গীত হান্নান ও সেজান। ব্যান্ড চিরকুট, আর্টসেলস শিল্পীরা। দুপুর থেকেই সঙ্গীত প্রেমীদের মাতিয়ে রাখেন তারা।
কনসার্টের বিরতিতে মঞ্চে আসেন জুলাই আগস্ট বিপ্লবের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। এ ছাড়াও শহীদ মুগ্ধুর ভাই স্নিগ্ধ, আহত গাজী আতিকুল, খোকন চন্দ্রসহ নিহত ও তাদের স্বজনরা মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।